দেশের সবচেয়ে বড় সিন্ডিকেটেড ঋণ নিচ্ছে বসুন্ধরা গ্রুপ

দেশের সব চেয়ে বড় সিন্ডিকেট ঋণ নিচ্ছে দেশের অন্যতম বড় শিল্প গোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপ। ব্যাংক এশিয়ার সাথে রাষ্ট্রায়ত্ব সোনালী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, বাংলাদেশ ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফাইন্যান্স ফান্ড লিমিটেড (বিআইএফএফএল) এই ঋণ দিচ্ছে। প্রস্তারিত ঋণের পরিমান প্রায় ৬ হাজার ৩৭৫ কোটি টাকা। ব্যাংক এশিয়ার সিএফও ইব্রাহিম খলিল জানান, গ্রাহক হিসাবে বসুন্ধরা গ্রুপ ভাল। এটি বিবেচনায় নিয়ে আমরা সিন্ডিকেটেড ঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। জ্বালানি খাত বাংলাদেশের সব চেয়ে সম্ভাবনাময় খাত। এখানে ঋণ দিয়ে আমরাও ভাল করবো। বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন শক্তিশালী হয়েছে। সরকার নিজস্ব অর্থায়নে পদ্ম সেতু করছে। এ জন্য সরকারের উপর চাপ আছে। বেসরকারী খাতে সিন্ডিকেটেড করে ঋণ দেওয়ার মধ্য দিয়ে আমরা অর্থনৈতিক উন্নয়ন সে কাজটি করতে চাই।
তিনি জানান, বাংলাদেশে সিন্ডিকেটেডেসহ বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় বড় ঋণ দেওয়া হলেও টাকার অঙ্কে এটাই সবচেয়ে বড় আয়োজন। অপরিশোধিত জ্বালানি তেল থেকে পরিশোধিত এলপিজি, ডিজেল, গ্যাসোলিন, ফার্নেস অয়েল, জেট ফুয়েল ও সালফার উৎপাদন হবে বেসরকারি খাতের এ প্রতিষ্ঠানে। এতে মোট ব্যয় হবে ৯ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকা। সিন্ডিকেট ঋণের বাইরের বাকি টাকা জোগান দেবে বসুন্ধরা গ্রুপ নিজেই। কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান ২০২২ সালের জুলাইয়ে উৎপাদনে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে বিওজিসিএল। জানা গেছে এ ঋণে অংশগ্রহণ করতে ইতিমধ্যে সরকারি-বেসরকারি খাত মিলে প্রায় ২০টি ব্যাংককে চিঠি দিয়েছে ব্যাংক এশিয়া। কোন কোন ব্যাংক এই ঋণে থাকছে তা চলতি মাসের মধ্যেই চূড়ান্ত হয়ে যাবে। এই সিন্ডিকেটেড ঋণে অংশগ্রহণকারি অন্যতম রাষ্ট্রায়ত্ব অগ্রণী ব্যাংক। অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শামস উল ইসলাম বলেন, এটি একটি ভাল উদ্যোগ। বসুন্ধরা গ্রুপ যে প্রডাক্ট করবে তা সরকারেরই কাছেই বিক্রি করবে। সুতরাং এই ঋণ নিয়ে আমাদের কোন অনিশ্চয়তা নেই।
তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতি বড় হচ্ছে, প্রবৃদ্ধির হার বাড়ছে। বড় বড় প্রকল্প আসছে। এখন আমাদের আরও বড় প্রকল্পে ঋণ দিতে হবে। আমাদের সে সক্ষমতাও আছে। দেশে যদি আরও বড় বড় উদ্যোগ হয় সেক্ষেত্রে রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকগুলো অর্থায়ন করতে পারবে। বেসরকারি ব্যাংকগুলোও সক্ষমতা সাথে এগিয়ে আসছে।
ব্যাংক এশিয়ার অন্য একটি সুত্র জানায়, চট্টগ্রামের সীতাকু-ের বাঁশবাড়িয়া এলাকায় ২২০ একর জমিতে গড়ে উঠবে এটি। ২০১৮ সালের জুলাইয়ে কাজ শুরু করে ২০২১ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পটি সম্পন্ন করার পরিকল্পনা করছে প্রতিষ্ঠানটি। চাহিদামতো ক্রুড তেল আমদানির জন্য একটি জেটিও নির্মাণ করবে প্রতিষ্ঠানটি। এটি চালু হলে এ প্রকল্প থেকে দৈনিক ১৫০ মেট্রিক টন এলপিজি, ৮ হাজার ১০৮ মেট্রিক টন ডিজেল, ১ হাজার মেট্রিক টন গ্যাসোলিন, ২ হাজার ৬৬৪ মেট্রিক টন ফার্নেস অয়েল, ১ হাজার ২০৫ মেট্রিক টন জেট ফুয়েল ও ৯৬ মেট্রিক টন সালফার উৎপাদন হবে। সম্পাদনা: বিশ্বজিৎ দত্ত