নিজগুণে তারা আলোকিত। জীবনে, কর্মক্ষেত্রে তারা আলো ছড়িয়েছেন।
দেখিয়েছেন পথের দিশা। অন্যদের কাছে তারা আজ প্রেরণার বাতিঘর। নিজ গুণে গুণান্বিত চার বিশিষ্ট গুণীকে সম্মাননা দিয়েছে বাংলাদেশ প্রতিদিন।
তাদের মধ্যে ভাষাসৈনিক আবদুল মতিন, সাংবাদিক-কলামিস্ট এবিএম মূসা ও নায়করাজ রাজ্জাককে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয়। রাজ্জাকের পক্ষে সম্মাননা গ্রহণ করেন তার সন্তান সম্রাট। আজীবন সম্মাননাপ্রাপ্ত গুণীজনেরা ক্রেস্ট ও ১ লাখ টাকা করে পেয়েছেন।
চিকিৎসা ক্ষেত্রে অবদানের জন্য ডা. প্রাণ গোপাল দত্তকে দেওয়া হয়েছে বিশেষ সম্মাননা।
বাংলাদেশের সাবেক প্রধান বিচারপতি মোস্তফা কামাল গুণীজনদের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন।
শনিবার দুপুরে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের কনফারেন্স রুমে ‘বাংলাদেশ প্রতিদিন-২০১২ সম্মাননা’ অনুষ্ঠানটি হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে সম্মাননাপ্রাপ্ত গুণীজনদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমের এডিটর ইন চিফ আলমগীর হোসেন, কালের কণ্ঠের সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, দি ডেইলি সানের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মো. জামিলুর রহমান।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের সাবেক প্রধান বিচারপতি মোস্তফা কামাল বলেন, ``বাংলাদেশের গণমাধ্যম অনেকদূর এগিয়েছে। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় পাকিস্তান অবজারভারে লেখালেখি করেছি। তখনকার মিডিয়া এতো উন্নত ছিলো না। এখন পত্রিকাগুলো ব্যাপক কলেবরে নানা রকম কাজ করে। অনলাইন পত্রিকার মতো আধুনিক মিডিয়া অনেক জনপ্রিয় হয়েছে। অথচ আমি সুপ্রিম কোর্ট থেকে অবসর নেবার পর কম্পিউটার চালানো শিখেছি। ``
তিনি বলেন, ``আমি সুপ্রিম কোর্টকে বিচারের মতো পবিত্র কাজের ইবাদতখানা বানাতে চেয়েছিলাম। মাত্র ৭ মাস প্রধান বিচারপতি থাকাকালে কতোটুকু কাজ করতে পেরেছি তা আদালতের সঙ্গে জড়িতরা মূল্যায়ন করবে। তবে বিচার ব্যবস্থাকে সাধারণ মানুষের দোড়গোড়ায় নিতে চেয়েছি। ``
বাংলাদেশ প্রতিদিন কর্তৃপক্ষকে শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, ``একটি পত্রিকার গুণীজন সংবর্ধনার উদ্যোগ প্রশংসার দাবিদার। যে চারজনকে সম্মাননা জানানো হলো আমার নিজের হাতে তাদেরকে সম্মাননাপত্র তুলে দিতে পেরে সম্মানিত বোধ করছি। আগামীতে এ ধরনের ভালো উদ্যাগের পাশে থাকবো। ``
আজীবন সম্মাননাপ্রাপ্ত বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কলামিস্ট এবিএম মূসা সম্মাননার জবাবে বলেন, ``এখন গণমাধ্যমের উপর আঘাত আসছে। গণমাধ্যম যদি না থাকে তাহলে রাষ্ট্রে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি হবে। রাষ্ট্রের প্রয়োজনে গণমাধ্যমের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। ``
তিনি গণমাধ্যম এবং সাংবাদিকদের কিছু অসঙ্গতি তুলে ধরেন। একটি দৈনিকের স্পোর্টস নিউজের বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘‘কিছুদিন আগে একটি দৈনিক পত্রিকায় সাড়ে ৩ কলামের একটি স্পোর্টস নিউজ দেখে খুব মনযোগ দিয়ে পড়লাম। পড়ে আমি ওই প্রতিবেদককে ফোন দিয়ে বলি- ‘তোমার নিউজটি মনযোগ দিয়ে পড়লাম, অনেক বড় রিপোর্ট লিখেছো কিন্তু খেলার রেজাল্ট কি, তাই লিখলে না। ’’
তিনি বলেন, ``সাংবাদিকতা অনেক বড় দায়িত্ব। অনেকে মনে করেন, সাংবাদিকতা খুব সহজ। আসলে তা নয়।
সাংবাদিকতার প্রশিক্ষণের প্রয়োজন আছে। ``
এবিএম মূসা সাংবাদিকতার বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরে বলেন, ``আমি টানা ২১ বছর একটি পত্রিকায় কাজ করেছি। ইদানিং অনেক তরুণ সাংবাদিককে দেখা যায়, ঘন ঘন হাউস পরিবর্তন করছেন; এটা তাদের ক্যারিয়ারের ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। ``
``সাংবাদিক সমাজের বিভক্তি আমাকে কষ্ট দেয়`` মন্তব্য করে তিনি বলেন, ``সাংবাদিকদের একাংশ-অপরাংশ দেখে খুবই ব্যথিত হই। নিজেদের স্বার্থে সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ``
গুণী এ সাংবাদিক বিভিন্ন বিষয়ে তার পেশাগত জীবনের টুকরো অভিজ্ঞতা তুলে ধরে সম্মাননা অনুষ্ঠানকে প্রাণবন্ত করে তোলেন। তিনি বলেন, ‘‘সেদিন একজন তরুণ সাংবাদিক আমাকে ফোন করে ‘স্যার’ সম্বোধন করেন। এতে আমি খানিকটা বিব্রত হয়ে বলি- ``আমাকে স্যার ডাকছো কেন?`` তিনি আমাকে বলেন-``কি ডাকবো?`` আমি বলি- ``ভাই ডাকবে। তুমিও মূসা ভাই ডাকবে। তোমার বাবাও মূসা ভাই ডাকবে। ’’
সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে সাংবাদিকতার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন এবিএম মূসা।
অপর আজীবন সম্মাননাপ্রাপ্ত ভাষাসৈনিক আবদুল মতিন বলেন, `আমরা মানসিকতায় যতো বাঙালি হবো, জাতি হিসেবে তত বড় হবো। তাই জাতির মন-মানসিকতা ও কাজেকর্মে খাঁটি বাঙালি হতে হবে। যে জাতি নিজের অতীত ভুলে যায় সে জাতি বড় হয় না। ``
তিনি বলেন, ``জাতি হিসেবে আমাদের ভীত ও হতাশ হবার কারণ নেই। এই জাতি কখনো মাথা নত করেনি। তবে আমাদের নতুন প্রজন্মের অনেকেই শিকড় ভুলে গেছে। তরুণদের শিকড়ের সন্ধান করতে হবে। যেমনটি করে আমি বর্ণ পরিচয় শিখতে গিয়ে ভালোবেসে বাঙালি হয়ে গেছি। ``
আবদুল মতিন বলেন, ``আমি সিরাজগঞ্জের চর এলাকায় এক গরিব পরিবারে জন্ম নিয়েছি। আমাকে মানুষ ভালবেসে `ভাষা মতিন` বলে ডাকে। এতে আমি সম্মানবোধ করি। বাংলাদেশ প্রতিদিন আমাকে সম্মাননা দিয়েছে, তা-ও আমার জন্য আনন্দের। ``
তিনি আরো বলেন, ``বাংলা ভাষা একটি প্রাণবন্ত ভাষা। এ দেশের ভাষা, কৃষক ও শ্রমজীবী মানুষকে নতুন প্রজন্ম ভালবাসবে। তারা সাম্রাজ্যবাদীদের প্রত্যাখ্যান করবে। আমরা সেই জাতি যারা ভাষার জন্য জীবন দিয়েছে। তাই এগিয়ে চলতে হবে। ``
বিশেষ সম্মাননাপ্রাপ্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও বিশিষ্ট চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত বলেন, ``হাসপাতাল ডাক্তারদের মন্দির আর রোগীরা দেবতা। আমি অনুরোধ করবো, সব ডাক্তার এ চিন্তা করে কাজ করবেন। আমি মনে করি, আমার হাসপাতাল মন্দিরে আমি সারাদিন রোগী-দেবতার পায়ে পূজা করি। এটাই আমার এবাদত। ``
তিনি বলেন, ``বাংলাদেশ প্রতিদিন আমাকে সম্মাননা দিয়েছে, এজন্য আমি কৃতজ্ঞ। তবে রবীন্দ্রনাথের মতো বলবো, এতো আয়োজন আমি দেখলাম, সব গ্রহণ করলাম। কিন্তু বহন করতে পারবো তো। আপনারা দোয়া করবেন, আমি যেন এই সম্মান ও দায় বইতে পারি। ``
ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত আরো বলেন, ``আসলে আমি একজন সাধারণ চিকিৎসক ছাড়া আর কিছু নই। তবে আমার অর্জন দুটো বলে আমি মনে করি। প্রথমত, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়ায় দলবাজি দূর করা। ফলে গরীব পরিবারের একজন সদস্যও বিএসএমএমইউতে পড়তে পারছেন।
দ্বিতীয়ত, সিনিয়র ও বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত সবার নাগালে পাওয়া। এ উদ্যোগের ফলে ডা. এবিএম আব্দুল্লাহের মতো সিনিয়র ডাক্তাররাও বিকেলে রোগী দেখছেন। এ খাতে কয়েক মাসে বিশ্ববিদ্যালয় ফান্ডে প্রায় ৪৪ লাখ টাকা জমা হয়েছে। ``
বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক ও কালের কণ্ঠ সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন অনুষ্ঠানে তার বক্তব্যে বলেন, ``আজ যাদের সম্মাননা দেওয়া হয়েছে, তারা আমাদের বাংলাদেশের গৌরব। আমরা প্রায়ই শুনি, বাংলাদেশ হতাশায় ডুবে গেছে। আমি মনে করি, হতাশার কোনো কারণ নেই। কারণ এসব আলোকিত গুণী মানুষের আলোয় বাংলাদেশ অনেকবার আলোকিত হয়েছে। ``
ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া হাউসের চারটি প্রতিষ্ঠানের সফলতা তুলে ধরে তিনি বলেন, অনলাইন পত্রিকা বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমের দেশ-বিদেশে বর্তমান পাঠক সংখ্যা (হিট সংখ্যা) প্রায় তিন কোটি । বাংলাদেশ প্রতিদিন প্রচার সংখ্যায় শীর্ষে অবস্থান করছে। কালের কণ্ঠ তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম। অনুষ্ঠান সঞ্চালন করেন বাংলাদেশ প্রতিদিনের নির্বাহী সম্পাদক পীর হাবিবুর রহমান।
গত মার্চ মাসে বাংলাদেশ প্রতিদিনের দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে সম্পাদক নঈম নিজাম বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্মাননা-২০১২ এর জন্য মনোনীত এ চার কীর্তিমানের নাম ঘোষণা করেন।
সম্মাননা অনুষ্ঠানে ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া লিমিটেডের চার পত্রিকার সম্পাদকগণ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা আবু তৈয়ব, ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের জ্যেষ্ঠ পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আহমেদ মোক্তাদির আরিফ, বাংলাদেশ প্রতিদিনের বার্তা সম্পাদক কামাল মাহমুদ, প্রধান প্রতিবেদক মনজুরুল ইসলামসহ ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের কর্মকর্তা ও বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা।
SOURCE : Banglanews24Hospital for Covid-19 Patients at Bashundhara’s ICCB to Open Soon
মীরসরাই এবং কেরানীগঞ্জে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করলো বসুন্ধরা গ্রুপ
বসুন্ধরা গ্রুপ কাপ গলফ টুর্নামেন্ট ২০১৩ গলফারদের উৎসব
Dazzling Finish of Bashundhara Cup Golf Tournament 2013
Bashundhara Group Exporting Tissue to 16 Countries
Bashundhara Group Chairman Stands by Ailing Girl
Bashundhara Group Chairman Ahmed Akbar Sobhan Stands by Sick Tasmia
India Willing Partner in Bangladesh Development
Bashundhara Group Chairman Stands by Ailing Boy Siraj
Ceremony of Bashundhara Cup Golf