থানা করতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ—ডিএমপিকে আড়াই বিঘা জমি দিলেন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। গতকাল বিকালে চেয়ারম্যানের নিজ বাসভবনে পুলিশের আইজি এ কে এম শহীদুল হক ও ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার হাতে জমির দলিল তুলে দেন বসুন্ধরা গ্রুপের কর্ণধার। রাজধানীর বসুন্ধরা বারিধারা আবাসিক এলাকার ‘এম’ ব্লকে হচ্ছে ডিএমপির ৫১তম থানা। পর্যায়ক্রমে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা মাদানীনগরে আরও একটি থানার জন্য জমি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন আহমেদ আকবর সোবহান। এ সময় পুলিশের পক্ষ থেকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়, ‘পুরো বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হবে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের আবাসিক এলাকার মতো সর্বাত্মক নিরাপত্তা দেওয়া হবে।’ এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন গুলশান জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার মোস্তাক আহমেদ, ডিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (ইঅ্যান্ডটি) সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (স্ট্রেট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট) মশিউর রহমান, বসুন্ধরা গ্রুপের সিনিয়র নির্বাহী পরিচালক (ল্যান্ড) লিয়াকত হোসেন, রংধুন গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রফিক প্রমুখ। দলিল হস্তান্তর অনুষ্ঠানে বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান বাংলাদেশ পুলিশকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি বলেন, ‘পুলিশের আইজি ও ডিএমপি কমিশনারসহ পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। তারা অত্যন্ত ব্যস্ততার মধ্যেও আমাদের সময় দিয়েছেন। থানার জন্য আমরা জমি দিচ্ছি। মূলত বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় বসবাসরতদের স্বার্থেই।’ তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না থাকলে দেশে ব্যবসা-বাণিজ্য, রাজনীতি, অর্থনীতি বা সমাজনীতি হবে না। গত ১০ বছর ধরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশবাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে তাদের বহু সদস্য নিহত হয়েছেন। আহতও হয়েছেন অনেক। তার পরও পুলিশবাহিনী এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের গণমাধ্যম তাদের এই ভূমিকার জন্য স্বাগত জানায়। আবার তাদের সমালোচনাও করা হয়। তবে এই সমালোচনার উদ্দেশ্য, যাতে তারা তাদের ভুল শুধরে নিতে পারেন। আমি বলব, সর্বকালের সেরা সময় এখন পুলিশ কাটাচ্ছে। পুলিশ নিবেদিতভাবে দেশের জন্য কাজ করে যাচ্ছে।’ বসুন্ধরা গ্রুপের কর্ণধার বলেন, ‘একটা সময় ছিল, পুলিশ দেখলেই আমরা খারাপ মন্তব্য করতাম। এখন কিন্তু সেটা উঠে গেছে। এখন পুলিশ জীবন বাজি রেখে কাজ করছে। গুলশানের জঙ্গি হামলায়ও দুই পুলিশ অফিসার নিহত হয়েছেন। বহু পুলিশ আহত হয়েছেন। পুলিশের আইজি ও ডিএমপি কমিশনার যে দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন, তাতে আজ দেশ অনেকটাই জঙ্গিমুক্ত বলা চলে।’ তিনি বলেন, ‘২০২১ সালের মধ্যেই এ দেশ মধ্য আয়ের দেশ হবে। এ ক্ষেত্রে পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। পুলিশ যদি ঠিকমতো শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে না পারে, তাহলে আমাদের সবকিছুই ভেস্তে যাবে। যে দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক না থাকে, সে দেশ উন্নত হতে পারে না। আমরা একটি থানার জন্য জায়গা দিয়েছি। ইনশা আল্লাহ খুব শিগগিরই আমরা মাদানীনগরে আরেকটি থানার জন্য জায়গা দেব; যাতে ওই এলাকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের সর্বাত্মক সহযোগিতা পেতে পারি। আমরা মনে করি, পুলিশ জনগণের বন্ধু হিসেবে কাজ করবে। আমরা হাতে হাত রেখে কাজ করলে আশা করি দেশের আইনশৃঙ্খলার আরও অনেক অনেক উন্নতি হবে। অদূর ভবিষ্যতে আমরা হাতে হাত রেখে কাজ করব।’ পুলিশের মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক বলেন, ‘বসুন্ধরা গ্রুপের এই উদ্যোগ— পুলিশের থানার জন্য যে জায়গা দিয়েছে তা অত্যন্ত ইতিবাচকভাবে আমরা দেখছি। এজন্য বাংলাদেশ পুলিশও কৃতজ্ঞ। কারণ, পুলিশ সামগ্রিকভাবে কাজ করে জনগণের জন্য ও জননিরাপত্তার জন্য। এ কাজ করতে গিয়ে সমাজের যে কমিউনিটি আছে, তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখি। তাদের সহায়তা নিয়ে পুলিশ কাজ করে। পুলিশ এককভাবে কোনো কাজ করতে পারে না। এ ক্ষেত্রে কমিউনিটির সঙ্গে একটি আস্থা ও সমঝোতার পরিবেশ সৃষ্টি হয়। আমাদের সীমাবদ্ধতা ও সমস্যা কমিউনিটিগুলো উপলব্ধি করতে পারে। সেই উপলব্ধি থেকেই বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আমাদের থানার জন্য জায়গা দিয়েছেন। অতিসত্বর আমরা একটি ভবন করতে পারব বলে আশা করছি।’ তিনি বলেন, ‘বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বিরাট জায়গায় হাজার হাজার লোক বসবাস করেন। তাদের নিরাপত্তার জন্য পুলিশ দরকার। এ কারণেই আমরা থানা করতে চেয়েছি। সে থানার জায়গা চেয়ারম্যান মহোদয় দিয়েছেন। আমি বিশ্বাস করি, থানা হলে এই এলাকার জনগণ নিরাপত্তার সঙ্গে বসবাস করবে। এজন্য বসুন্ধরা গ্রুপকে আমার ও বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাই। বসুন্ধরা চেয়ারম্যানের প্রতি কৃতজ্ঞতা পোষণ করি। আমরা আগামী দিনেও জনস্বার্থে একসঙ্গে কাজ করে যাব।’ ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ‘আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে, এই বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার পুরোটাকে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা—সিসিটিভির অধীনে নিয়ে আসব। এখানে বিভিন্ন প্রবেশপথ পুনর্গঠন করে ভিন্নভাবে করব। এমনভাবে করব যাতে পুরো আবাসিক এলাকা সম্পূর্ণ নিরাপদ সিটি হিসেবে গড়ে তোলা যায়। বসুন্ধরা সিটি এখন এগোতে এগোতে বালু নদ পর্যন্ত গিয়েছে। আমরা অনুভব করছি, যেভাবে এখানে লোকসংখ্যা বাড়ছে, নাগরিক সুবিধা বাড়ছে, আগামীতে এখানে নতুন শহর হবে। আরও বাড়িঘর হবে। সেই মানুষের নিরাপত্তা দিতে আরও থানার সংখ্যা বাড়াতে হবে। সেই হিসেবে আজ বসুন্ধরা গ্রুপ আমাদের থানার জন্য জায়গা দিয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, এর সুফল এই এলাকার জনগণ পাবে। নগরবাসী পাবে। আমরা বিদেশের মতোই বিভিন্ন এলাকায় শহর নিরাপদ প্রকল্প বা আবাসিক এলাকা গড়ে তুলতে চাই; যা আমাদের দেশের জন্য মডেল হতে পারে। আমি বসুন্ধরা গ্রুপের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। আশা করছি, দেশের জন্য জননিরাপত্তার জন্য বাংলাদেশ পুলিশ ও বসুন্ধরা গ্রুপের একসঙ্গে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। সেভাবে আমরা আগামীতেও মানুষের জন্য একসঙ্গে কাজ করব। সেই প্রত্যাশা রাখি। আমরা বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যানসহ সব কর্মকর্তাকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। পাশাপাশি রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামকেও ধন্যবাদ জানাই। তিনিও পুলিশের পাশে রয়েছেন।’
SOURCE : বাংলাদেশ প্রতিদিনবসুন্ধরা গ্রুপের দুই কোম্পানিকে সম্মাননা মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের
Bashundhara Group’s Units Recognised as Highest Revenue Contributors to Mongla Port
হোমনায় বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের সুদ ও সার্ভিস চার্জ মুক্ত ঋণ বিতরণ
Bashundhara Foundation Distributes Interest-Free Loans in Homna
বসুন্ধরার উদ্যোগে বিনা মূল্যে চিকিৎসা পেলেন ৫ শতাধিক রোগী
কুষ্টিয়ায় বসুন্ধরা আই হসপিটালের সেবা পেলেন ১২,৫০০ মানুষ
Bashundhara Eye Hospital Provide Free Eye Treatment to 12,500 People in Kushtia
সিলেটে বসুন্ধরা শুভসংঘের সেলাই মেশিন বিতরণ
Bashundhara Shuvosangho Distributes Sewing Machines in Sylhet
বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তায় শত বাধা পেরিয়ে সফল তারা