বসুন্ধরা গ্রুপের উদ্যোগে পাবনার তিনটি উপজেলায় ৯০ দিনব্যাপী সেলাই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ভাঙ্গুড়া, চাটমোহর ও সুজানগরে আলাদা তিনটি প্রশিক্ষণকেন্দ্রের মাধ্যমে গ্রামীণ অসহায় ৫০ নারী এই প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। প্রশিক্ষণ শেষে বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে তাঁদের হাতে সেলাই মেশিন তুলে দেবেন প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক ও কালের কণ্ঠ’র প্রধান সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন। আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর প্রশিক্ষিত এই নারীদের হাতে সেলাই মেশিন তুলে দেওয়ার কথা রয়েছে।
সপ্তাহে তিন দিন দুই ঘণ্টা করে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে সেলাই ও কাটার কাজ শিখছেন তাঁরা। সেলাইয়ের প্রতিটি ফোঁড়ে বুনছেন নতুন নতুন স্বপ্ন। তাঁদের কেউ কেউ আবার উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্নও দেখে ফেলেছেন।
ভাঙ্গুড়ায় পৌরসভার মেয়র গোলাম হাসনাইন সরকারি ভাঙ্গুড়া ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের হলরুমে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। এই উপজেলায় সমাজের পিছিয়ে পড়া অসচ্ছল ১৫ নারীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। বসুন্ধরা শুভসংঘ ভাঙ্গুড়া উপজেলা শাখার সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক তুলি রানী সরকার ও সাংগঠনিক সম্পাদক কলি রানী সেলাই প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের প্রথম দিন প্রশিক্ষক সেলাইয়ের কাজে ব্যবহৃত মেশিনসহ বিভিন্ন সরঞ্জামের ব্যবহার সম্পর্কে ধারণা দেন প্রশিক্ষণার্থীদের।
প্রায় দুই ঘণ্টার সেশনে সবার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম। অনেকেই সেদিন আবেগপ্রবণ হয়ে প্রশিক্ষণ শেষে নিজেরা স্বাবলম্বী হয়ে স্বপ্নপূরণের কথা বলেন। তাঁদেরই একজন বিধবা রুমা খাতুন। তিনি বলেন, ‘বিয়ে হওয়ার তিন বছর পরেই স্বামী মারা যায়। একমাত্র সন্তান ওমর ফারুক দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে।
অভাব-অনটনে দিন যায়। সেলাইয়ের কাজ জানি, কিন্তু মেশিন কেনার সামর্থ্য নেই। এখন প্রশিক্ষণ নিচ্ছি। ভালোভাবে কাজ শিখতে পারলে বসুন্ধরা গ্রুপ থেকে আমাকে একটি সেলাই মেশিন দেওয়া হবে। সেলাই মেশিন পেলে উপার্জন করে সন্তানকে নিয়ে সুন্দরভাবে জীবন যাপন করতে পারব।’
মর্জিনা খাতুনের স্বামী শারীরিক প্রতিবন্ধী। কোনো কাজকর্ম করতে পারেন না। একমাত্র ছেলে কলেজে পড়াশোনা করে। মর্জিনা বলেন, ‘ছেলের খরচ দিতে পারি না। বিভিন্নজনের কাছ থেকে সাহায্য-সহযোগিতা নিয়ে চলতে হয়। সেলাইয়ের কাজ শিখে কিছু আয় করতে পারলে পরিবার নিয়ে ভালো থাকতে পারব। এ জন্য এখানে সেলাইয়ের কাজ শিখছি। বসুন্ধরা থেকে আমাকে একটি সেলাই মেশিন দিলে খুব উপকার হবে। আল্লাহ বসুন্ধরা গ্রুপের সবাইকে ভালো রাখবেন।’ আরেক প্রশিক্ষণার্থী শাহানা খাতুন বলেন, ‘বিয়ের পর থেকেই মাদকাসক্ত স্বামী সব সময় মারধর করত। পাঁচ বছর সংসার করার পর আমাকে রেখে সে পালিয়ে যায়। অর্থের অভাবে মেয়েকে বাল্যবিবাহ দিই। বছর না ঘুরতেই জামাই মেয়েকে তাড়িয়ে দিয়েছে। আমার বাবার বাড়িতে এখন মেয়েকে নিয়ে খুব কষ্টে দিন যাপন করি। আমরা মা ও মেয়ে সেলাইয়ের কাজ করে নিজেদের কষ্ট দূর করতে চাই। দুজনেই সেলাইয়ের কাজ শিখছি। একটি মেশিন পেলেই দুজনে সেলাই কাজ করে চলতে পারব। আমাদের আর কষ্ট থাকবে না। বসুন্ধরা গ্রুপ আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। অন্য কেউ কখনো এগিয়ে আসেনি। আল্লাহ বসুন্ধরার ভালো করুক।’
শুধু মর্জিনা, রুমা খাতুন বা শাহানা নন, উপজেলার এমন সুবিধাবঞ্চিত অসহায় আরো ১২ অসচ্ছল নারীকে স্বাবলম্বী করতে কাজ করছে বসুন্ধরা শুভসংঘ। তাঁদের সেলাই প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে তোলা হচ্ছে। সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে তাঁদের হাতে সেলাই মেশিন তুলে দেওয়া হবে। এই সেলাই মেশিন হবে তাঁদের স্বপ্ন পূরণের হাতিয়ার। ভাঙ্গুড়া পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম হাসনাইন রাসেল বলেন, ‘মানবকল্যাণে বসুন্ধরা গ্রুপের কার্যক্রমগুলো আমাদের অনুপ্রাণিত করে। বসুন্ধরা গ্রুপের উদ্যোগে প্রশিক্ষণ পাওয়া নারীরা অসচ্ছল পরিবারকে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করার সুযোগ পাবে। তারা নিজেরাও মাথা উঁচু করে সমাজে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পারবে। এমন মানবিক কাজের জন্য বসুন্ধরা শুভসংঘকে সাধুবাদ জানাই।’
SOURCE : কালের কণ্ঠবসুন্ধরা শুভসংঘের প্রশিক্ষণ ও সেলাই মেশিন পেলেন মাদারীপুরের ২০ নারী
বসুন্ধরা শুভসংঘের খাদ্য সহায়তা পেলেন অসহায় ৩০ জন মানুষ
মাগুরায় বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প
Bashundhara Foundation Organises Daylong Free Medical Camp in Magura
সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য বসুন্ধরা শুভসংঘের পিঠা উৎসব
Bashundhara Shuvosangho's Pitha Utsav for Disadvantaged Children
দেবীগঞ্জে বসুন্ধরা শুভসংঘের কম্বল বিতরণ
বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগে অসহায়দের মধ্যে খাবার বিতরণ
Bashundhara Shuvosangho's Initiative Involves Distributing Food to the Needy
বসুন্ধরা গ্রুপের দুই কোম্পানিকে সম্মাননা মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের