বর্ণমালা যে কোনো জাতির পরিচয় বহন করে। ভাষাশহীদদের রক্তে ভেজা বাংলা বর্ণমালা জাতির গর্ব ও অহংকারের সঙ্গে মিশে আছে আষ্টেপৃষ্ঠে। জাতির চেতনা ও অস্তিত্বের সঙ্গে মিশে আছে এই বর্ণমালা। নিজের ভাষা, নিজের বর্ণমালাকে গর্বের সঙ্গে তুলে ধরার প্রত্যয়ে এগিয়ে এসেছে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপ। বাংলা ভাষার প্রতি ভালোবাসা আর ফন্টের ব্যবহারকে আরও সাবলীল করতে বসুন্ধরা গুঁড়া মশলা তথা বসুন্ধরা গ্রুপ ভাষার মাসে নিয়ে এলো তিনটি নতুন ফন্ট। ‘চেতনার বর্ণমালা’ শিরোনামের এই তিনটি ফন্ট হলো- ‘বসুন্ধরা ২১’, ‘বসুন্ধরা ৫২’, ও ‘বসুন্ধরা ৭১’। ফন্ট তিনটি তৈরিতে অনুপ্রেরণা হিসেবে নেওয়া হয়েছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা নানা আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং আপামর বাংলার রূপ-বৈচিত্র্য।
গতকাল বিকালে বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে এক জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে ফন্টগুলোর উদ্বোধন এবং সবার ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। ফন্ট তিনটির উদ্বোধন করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি ও বরেণ্য কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নুরুল হুদা এবং বিশিষ্ট কবি হেলাল হাফিজ, কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন।সেলিনা হোসেন উদ্বোধন করেন ‘বসুন্ধরা ৭১’, মুহম্মদ নুরুল হুদা উদ্বোধন করেন ‘বসুন্ধরা ৫২’ ও হেলাল হাফিজ উদ্বোধন করেন ‘বসুন্ধরা ২১’।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা গ্রুপের সিওও (ব্র্যান্ড ও মার্কেটিং সেক্টর-এ) এম এম জসীম উদ্দিন, ফন্ট তিনটির নির্মাতা শিল্পী ও গ্রাফিক আর্টিস্ট সেলিম হোসেন সাজু। কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন বলেন, আমরা মনে করি ৭১, ৫২ এবং ২১ সব মিলিয়ে আমাদের ইতিহাসের একটি ধারাকে রক্ষা করার ভিতর দিয়ে বর্ণমালার এই ফন্টগুলো আমাদের প্রজন্মের সামনে পৌঁছে যাবে। এতে তারা আমাদের ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধসহ বিভিন্ন বিষয়ে জানতে পারবে। আমরা সবাই এখন যদি এই চেতনার বর্ণমালাগুলো ব্যবহারে নিজেদের উদ্যোগকে কাজে লাগাই তবে এটি আমাদের কাছে একটি বড় দৃষ্টান্ত হবে। আর এই দৃষ্টান্তের মধ্য দিয়েই পূর্ণ বৈচিত্র্যে এগিয়ে যাবে বাংলা ফন্টের একটি দিক।
কবি মুহম্মদ নুরুল হুদা বলেন, এই কাজের মাধ্যমে আমাদের বর্ণমালার ক্ষেত্রে একটি নতুন সৃষ্টিশীলতা যুক্ত হলো। ডিজিটাল মাধ্যমের এই ফন্টের মাধ্যমে আমরা বর্তমানকে ধারণ করব এবং বর্তমানই আমাদের বর্ণিল সুন্দরের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। কবি হেলাল হাফিজ বলেন, এমন একটি ব্যতিক্রমী নান্দনিক শিল্পকর্মের কথা শিল্পীর মনে ও মগজে উদ্ভাসিত হয়েছিল এবং এটি সৃষ্টিতে তাড়িত করেছে। এ জন্য শিল্পী এবং পৃষ্ঠপোষক বসুন্ধরা গ্রুপকে অভিনন্দন। স্বাধীনতার ৫০ বছর হয়ে গেছে, অথচ শিল্প-সাহিত্য অঙ্গনে মহাকালের কাছে চিরস্থায়ী তেমন কোনো শিল্পকর্ম এখনো আমরা দাঁড় করাতে পারিনি। তবুও আশা করি আজকের এই আয়োজন নতুন উদ্যমে আমাদের পৃথক যাত্রার সূচনা করবে।
এ সময় কবি হেলাল হাফিজ ‘বসুন্ধরা ২১’, ‘বসুন্ধরা ৫২’ এবং ‘বসুন্ধরা ৭১’ ফন্ট তিনটিতে লিখে নিয়ে আসা তার তিনটি অনুকাব্য পাঠ করে শোনান।
ইমদাদুল হক মিলন বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপ প্রত্যেকটি ভালো কাজের সঙ্গে থাকতে চায়। ১৯৫২ সালে পত্র-পত্রিকায় যে অক্ষরগুলো ব্যবহার করা হতো, সেই আদলে তৈরি হয়েছে ‘বসুন্ধরা ৫২’ ফন্টটি। ১৯৭১ সালে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় যে ফন্টটি ব্যবহার করা হতো সে ধাঁচটি উঠে এসেছে ‘বসুন্ধরা ৭১’ ফন্টটিতে। সঙ্গে আরও কিছু অভিনব বিষয় যুক্ত করেই তৈরি হয়েছে এই ফন্টগুলো।
বসুন্ধরা গ্রুপের ব্র্যান্ড ও মার্কেটিং বিভাগের সিওও (সেক্টর-এ) এম এম জসীম উদ্দিন বলেন, দেড় বছর ধরে এই ফন্টগুলোর কাজ হয়েছে। এর রৈখিক পরিবর্তন, আঙ্গিক পরিবর্ধন এবং তিনটি বিষয় নিয়ে আমরা কাজ করেছি। এখানে আমাদের যতটা বাণিজ্যিক চিন্তা এসেছে, তার থেকে বেশি চিন্তা এসেছে যে, বাংলা ভাষাকে সমৃদ্ধ রাখতে হলে ডিজিটালি বাংলা ভাষার ফন্টের কোনো বিকল্প নেই। এ সময় তিনি ‘৬৯’-কে আলোকপাত ও চেতনায় ধারণ করে আরও একটি ফন্ট ডেভেলপ করার জন্য নতুন তিনটি ফন্টের নির্মাতাকে আহ্বান জানান এবং প্রয়োজনে বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে পৃষ্ঠপোষকতার আশ্বাস প্রদান করেন।
ফন্ট তিনটির নির্মাতা সেলিম হোসেন সাজু বলেন, ২১, ৫২ এবং ৭১-এর চেতনাকে ধারণ করে এই ফন্টগুলো নির্মাণ করা হয়েছে। এ ধরনের কাজে পৃষ্ঠপোষক অনেক কম। তবুও বসুন্ধরা গ্রুপ এগিয়ে এসেছে এবং আমরা পেরেছি। আমি আশা করছি ‘বসুন্ধরা ২১’, ‘বসুন্ধরা ৫২’ এবং ‘বসুন্ধরা ৭১’ ফন্টগুলোর মাধ্যমে আমরা আমাদের ঐতিহাসিক সময়গুলোকে ধরে রাখতে পারব।
সব শেষে প্রকাশ করা হয় উদ্বোধনী স্মারক গ্রন্থ। এই স্মারক গ্রন্থে উঠে এসেছে বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান এবং ভাইস চেয়ারম্যান সাফিয়াত সোবহানের লেখাসহ ফন্ট নিয়ে বিভিন্ন বিষয়।
SOURCE : বাংলাদেশ প্রতিদিনকুষ্টিয়ায় বসুন্ধরা আই হসপিটালের সেবা পেলেন ১২,৫০০ মানুষ
Bashundhara Eye Hospital Provide Free Eye Treatment to 12,500 People in Kushtia
সিলেটে বসুন্ধরা শুভসংঘের সেলাই মেশিন বিতরণ
Bashundhara Shuvosangho Distributes Sewing Machines in Sylhet
বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তায় শত বাধা পেরিয়ে সফল তারা
They Overcame Numerous Hurdles With Bashundhara Group's Support
বগুড়ায় বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগে শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ
Bashundhara Shuvosangho Provides Educational Materials to Students in Bogra
বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তায় বাঞ্ছারামপুরে ৫,৩০০ শিক্ষার্থীর মাঝে কোরআন শরীফ বিতরণ
Bashundhara Gifts Holy Qur’an to 5,300 Students in Bancharampur