শীতের আবহ কাটিয়ে গায়ে মাখা রোদ তখন কেবল শরীরে লাগতে শুরু করেছে। বাড়ির কিছু কাজ শেষ করে হোমনা উপজেলার পাঁচটি গ্রামের দুই শতাধিক নারী জমায়েত হয়েছেন হরিপুর গ্রামে। সবাই বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের সুদ ও সার্ভিস চার্জমুক্ত ক্ষুদ্রঋণ নিতে এসেছেন।
সুদ কিংবা সার্ভিস চার্জ নেই, এমনকি জামানতের প্রয়োজন হয় না। অবিশ্বাস্য মনে হলেও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের ভাগ্য ফেরাতে প্রায় দুই দশক ধরে এমনই মানবিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে দেশের শীর্ষ শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপ।
এই কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় সোমবার (২৪ নভেম্বর) কুমিল্লার হোমনায় পাঁচটি গ্রামের ২০১ জন নারীর মাঝে বিতরণ করা হলো ৩২ লাখ টাকার ঋণ। সুদ ও শর্তহীন এই ঋণ সহায়তা পেয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কুমিল্লার প্রায় ৩০ হাজার পরিবারের জীবনে ফিরেছে সচ্ছলতা। বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের তত্ত্বাবধানে আয়োজন করা হয় ৮০তম ঋণ বিতরণ অনুষ্ঠানের। অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন বসুন্ধরা গ্রুপের উপদেষ্টা ইমদাদুল হক মিলন ও ময়নাল হোসেন চৌধুরী।
আয়োজকরা জানান, কুমিল্লার হোমনা উপজেলার এই নারীরা প্রত্যেকেই একেকজন সংগ্রামী। সংসারের হাল ধরতে কাজ করছেন দিনরাত, কিন্তু পুঁজির অভাবে বারবার থমকে যাচ্ছিল তাদের স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন। ঠিক সেই মুহূর্তে তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে পাশে এসে দাঁড়িয়েছে বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তায় পরিচালিত বসুন্ধরা ফাউন্ডেশন।
এর আগে এখানকার অনেক নারী মহাজন বা এনজিওর চড়া সুদের ফাঁদে পা দিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন। তবে বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের সুদ ও সার্ভিস চার্জমুক্ত এই ঋণ তাদের জীবনে এনে দিয়েছে স্বস্তি, বদলে দিয়েছে জীবনযাত্রার মান।
কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন ঋণ নিতে আসা নারীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘‘সুদ-সার্ভিস চার্জ মুক্ত ও জামানতবিহীন এ ধরণের ঋণ দিয়ে বিরল দৃষ্টান্ত প্রতিষ্ঠা করেছে বসুন্ধরা গ্রুপ। বসুন্ধরা গ্রুপের মাননীয় চেয়ারম্যান আপনাদের জীবনমান উন্নয়নে পাশে দাঁড়িয়েছেন। এই সুদ ও সার্ভিস চার্জ মুক্ত ঋণ নিয়ে আপনারা সংসারে সচ্ছলতা ফেরাবেন, এটাই আমাদের চাওয়া। এই টাকার কেউ অপব্যবহার করবেন না। টাকাগুলো সঠিক ব্যবহার করে আপনার সুন্দর জীবনযাপন করুন, এই শুভকামনা রইল।’’
ময়নাল হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘‘খুঁজে বের করে গ্রামের দরিদ্র নারীদের স্বাবলম্বী করতে ক্ষুদ্র ঋণ দেয় বসুন্ধরা ফাউন্ডেশন। এমন মানুষকে ঋণ দেওয়া হয়, যারা এই টাকাগুলো সঠিক কাজে লাগাতে পারেন। একজন জেলের মাছ ধরার জাল যদি ছিঁড়ে যায় কিংবা মাছ ধরার নৌকা ফুটো হয়ে যায়, অল্প কিছু টাকার জন্য তার আয়ের পথ বন্ধ হয়ে যায়। আমরা সেই মানুষগুলোর পাশে দাঁড়াই। এই টাকা নিয়ে নারীরা কৃষিকাজ করেন। সেলাই মেশিন কিনে সেলাইয়ের কাজ করেন। এই পর্যন্ত ৩০ হাজার নারী স্বাবলম্বী হয়েছেন।’’
২০০৫ সাল থেকে চলমান সুদমুক্ত ও জামানতবিহীন এই ঋণ কার্যক্রমের সুফল পাচ্ছেন হোমনা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর ও নবীনগর উপজেলার হাজারো মানুষ। এখন পর্যন্ত ২৯ হাজার ৬৫১টি সুবিধাবঞ্চিত পরিবার এই সহায়তা পেয়ে অর্জন করেছেন স্বাবলম্বিতা।
বাচ্চা কোলে ঋণ নিতে আসা দরিগাঁওয়ের শারমিন বলেন, আগেও আমি দুইবার ঋণ নিয়েছি। তৃতীয়বার ঋণ নিচ্ছি। আমি এই ঋণ নিয়ে এখন স্বাবলম্বী হয়েছি। এইবার একটা সেলাই মেশিন কিনবো। আগের দুইবারই হাঁস, মুরগি কিনেছিলাম। আমার ভালো আয় হয়েছে। আমার মতো অনেকেই এখন বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের সুদ ও সার্ভিস চার্জমুক্ত ঋণ নিয়ে স্বাবলম্বী হয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, কেবল ঋণ সহায়তাই নয়; শিক্ষাবৃত্তি, বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা, প্রশিক্ষণ শেষে সেলাই মেশিন বিতরণসহ নানা সামাজিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সব সময় সাধারণ মানুষের পাশে থাকছে বসুন্ধরা গ্রুপ।
বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের এই সুদমুক্ত ঋণ কার্যক্রম শুধু আর্থিক সচ্ছলতাই আনছে না, গ্রামীণ নারীদের আত্মমর্যাদা বৃদ্ধিতেও রাখছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। চড়া সুদের ফাঁদ থেকে মুক্তি পেয়ে আজ নিজেদের পায়ে দাঁড়ানোর যে স্বপ্ন দেখছেন এই নারীরা, তাতে বদলে যাচ্ছে এখানকার গ্রামীণ অর্থনীতির চিত্রও।
SOURCE : আলোচিত বাংলাদেশবসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের সুদমুক্ত ঋণ বিতরণ, সচ্ছলতার স্বপ্ন ২ শতাধিক নারীর
Bashundhara Foundation’s Interest-Free Loans Bring the Dream of Prosperity to Over 200 Women
বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগে চরফ্যাশনে সেলাই মেশিন বিতরণ
Bashundhara Shuvashangha Distributes Sewing Machines in Charfassion
সড়কের চিত্র বদলে দিতে ব্যবহৃত হচ্ছে বসুন্ধরার বিশেষ বিটুমিন
সীমান্তবর্তী নারীদের পাশে বসুন্ধরা গ্রুপ
Bashundhara Group Stands Beside Border-Area Women
বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তায় স্বপ্নপূরণের আশা
Bashundhara Group’s Support Brings Hope to Fulfill Dreams
বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের সুদমুক্ত ঋণে স্বাবলম্বী ২৯ হাজার পরিবার