All news

গ্রামীণ নারীর জীবনমান উন্নয়নের টেকসই পদক্ষেপ

গ্রামীণ নারীর জীবনমান উন্নয়নের টেকসই পদক্ষেপ

দক্ষিণ উপকূলের অতিদরিদ্র অসহায় পরিবারের নারীদের পাশে দাঁড়িয়েছে দেশের শীর্ষ শিল্পপ্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপ। দেশসেরা সামাজিক সংগঠন বসুন্ধরা শুভসংঘের মাধ্যমে বিধবা, স্বামী পরিত্যক্তা ও অবহেলিত নারীদের স্বাবলম্বী করতে বিনামূল্যে তিন মাস সেলাই ও কাপড় কাটার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি তাঁরা সবাই কাজ শিখে দক্ষ হওয়ার পর বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে প্রত্যেকের হাতে সেলাই মেশিন তুলে দিয়েছে বসুন্ধরা শুভসংঘ। বরগুনা জেলার আমতলী এবং পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলা শাখা বসুন্ধরা শুভসংঘের স্বেচ্ছাসেবকরা অসচ্ছল পরিবারের ৩০ জন নারীকে প্রশিক্ষণের জন্য বাছাই করেন।
একজন গ্রামীণ নারীর জীবনমান উন্নয়নের টেকসই পদক্ষেপদক্ষ নারী প্রশিক্ষক দিয়ে তিন মাস প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় তাঁদের। সংসারের বোঝা কাঁধে নিয়ে যখন দিশাহারা হয়েছিলেন এই নারীরা, তখনই বসুন্ধরা গ্রুপ সহায় হয়ে তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছে। বাড়িয়ে দিয়েছে সহানুভূতির হাত। বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ ও সেলাই মেশিন পেয়ে আনন্দে আত্মহারা হন সবাই। কলাপাড়া উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নের রাশিদা বেগম বলেন, ‘স্বামী মারা গেছে ১০ বছর আগে। মানুষের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে বহুভাবে প্রতারিত হয়েছি। ক্লান্ত, রোগাক্রান্ত হয়ে পড়েছিলাম। নিরুপায় হয়ে বসে ছিলাম।

কী করব, কী খাব চিন্তা করে যখন অস্থির হয়ে পড়ি, তখন কলাপাড়া শুভসংঘের কয়েকজন আমায় খুঁজে বের করে স্বাবলম্বী করার জন্য। আমাকে সেলাই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ভর্তি করে নেয়। সেলাইয়ের প্রশিক্ষণ এবং নতুন মেশিন পেয়ে জীবিকা নির্বাহের পথ খুঁজে পেয়েছি। অনেক প্রতিষ্ঠান টাকার বিনিময়ে সহযোগিতা করে। কিন্তু বসুন্ধরা গ্রুপ সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দেশ ও মানুষের কল্যাণে নিঃস্বার্থভাবে কাজ করেছে।
তাদের কল্যাণেই দরিদ্র অসহায় মুসলিম, হিন্দু ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের আমরা ৩০ জন অসহায় নারী জীবনসংগ্রামে জয়ী হতে পারছি।’
বসুন্ধরা শুভসংঘ কলাপাড়া শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. আতিকুর রহমান মিরাজ বলেন, ‘আমতলী ও কলাপাড়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ঘুরে প্রকৃত অসহায় নারীদের খুঁজে বের করে তালিকাভুক্ত করেছি আমরা। নিরপেক্ষভাবে যাচাই-বাছাই শেষে তালিকা চূড়ান্ত করে তাঁদের বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এখন আনুষ্ঠানিকভাবে বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে তাঁদের হাতে সেলাই মেশিন তুলে দিয়ে বাড়ি পর্যন্ত যাওয়ার ভাড়াটিও দিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁদের বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার কাজ করতে পেরে আমরা বসুন্ধরা শুভসংঘের সদস্যরা খুব তৃপ্ত হয়েছি।’

বসুন্ধরা শুভসংঘের পরিচালক ও কালের কণ্ঠের সিনিয়র সহসম্পাদক জাকারিয়া জামান বলেন, ‘বসুন্ধরা গ্রুপের মাননীয় চেয়ারম্যান স্যারের নির্দেশে, ইমদাদুল হক মিলন স্যারের নেতৃত্বে বসুন্ধরা শুভসংঘ সারা দেশে কাজ করছে। সমাজ ও দেশ গঠনের লক্ষ্যে নানা সামাজিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার পাশাপাশি অসচ্ছল পরিবারের মেধাবী সন্তানদের উচ্চশিক্ষা অর্জনে আর্থিক সহায়তা, অসহায় মানুষকে সহযোগিতা করাসহ দুর্যোগে আক্রান্ত মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে বসুন্ধরা শুভসংঘ। গত ৩৮ বছরে শিল্প উন্নয়নের পাশাপাশি মানুষের কল্যাণে অসংখ্য কাজ করেছে বসুন্ধরা গ্রুপ। প্রশিক্ষণ দিয়ে সেলাই মেশিন বিতরণ কার্যক্রমও গ্রামীণ নারী উন্নয়নের একটি টেকসই পদক্ষেপ বসুন্ধরা গ্রুপের।’

সামাজিক, রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে আমতলী পৌরসভা মিলনায়তনে জাকারিয়া জামানের সভাপতিত্বে সেলাই মেশিন বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রোকনুজ্জামান খান। আরো উপস্থিত ছিলেন আমতলী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তারেক হাসান, আমতলী থানার ওসি আরিফুল ইসলাম, সমাজসেবা কর্মকর্তা মঞ্জুরুল হক কাওসার, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এবং আমতলী উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব ও উপজেলা শুভসংঘের উপদেষ্টা মো. তুহিন মৃধা, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও শুভসংঘের উপদেষ্টা মো. তারিকুল ইসলাম টারজান, জেলা জামায়াতের শুরা ও কর্মপরিষদের সদস্য মো. আব্দুল মালেক, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের উপজেলা সভাপতি মুফতি ওমর ফারুক জিহাদী, সাংবাদিক মো. জাকির হোসেন, এ কে এম খায়রুল বাশার বুলবুল প্রমুখ। বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগে আয়োজিত সেলাই মেশিন বিতরণ অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন কলাপাড়া উপজেলা প্রতিনিধি জসীম পারভেজ, আমতলী উপজেলা প্রতিনিধি হায়াতুজ্জামান মিরাজ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন কলাপাড়া ও আমতলী উপজেলা শুভসংঘের সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান মিরাজ ও রিয়াজুল ইসলাম ইমন।

SOURCE : কালের কণ্ঠ