সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কমছে বাংলাদেশের বনভূমি। প্রয়োজন-অপ্রয়োজনে সমানে কেটে ফেলা হচ্ছে পরিবেশের অন্যতম নিয়ামক বৃক্ষ। এই বৃক্ষের ছায়াতলেই গড়ে উঠেছে মানবসভ্যতা। মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণের পাশাপাশি প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব রোধ, প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষাসহ নৈসর্গিক শোভাবর্ধনে বৃক্ষের গুরুত্ব অপরিসীম।
পরিবেশের দূষণ রোধ ও বৈশ্বিক উষ্ণতা কমাতে অতীব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে বৃক্ষ। এই বিষয়ে মানুষকে সচেতন করতে এবং সবুজ বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করছে বসুন্ধরা শুভসংঘ। গত কয়েক দিনে বৃষ্টির পরিমাণ একটুখানি বেড়ে যেতেই সারা দেশে গাছ লাগানো শুরু করেছেন বসুন্ধরা শুভসংঘের বন্ধুরা। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে শিক্ষার্থীদের হাতে হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে নানা রকম গাছের চারা।
রাস্তার ধারে, খোলা জায়গায়, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চারপাশে নিজেরা গাছ লাগাচ্ছেন শুভসংঘের সদস্যরা, পাশাপাশি মানুষকে পরিবেশের বিরূপ প্রভাব নিয়ে সচেতন করছেন। গাছ লাগানোর উপকারিতা জানিয়ে মানুষের হাতে হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে গাছের চারা। বর্ষাকালব্যাপী এই আয়োজন চলবে বলে জানিয়েছেন বসুন্ধরা শুভসংঘ কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক শরীফ মাহ্দী আশরাফ জীবন।
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) স্কুলের শিক্ষার্থীদের নিয়ে বৃক্ষরোপণের আয়োজন করা হয়েছিল।
আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. জামাল উদ্দিন আহাম্মদ, স্থাপত্য ও পরিকল্পনা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ রাশিদুল হাসান। বৃক্ষরোপণের প্রয়োজনীয়তা এবং শিক্ষার্থীদের আগ্রহী করে তোলার প্রতি জোর দিয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, ‘বৃক্ষ আমাদের পরম বন্ধু। বৃক্ষ আমাদের ছায়া, ফুল, ফল ও অক্সিজেন দিয়ে সাহায্য করে। দেশব্যাপী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি হাতে নেওয়ার জন্য বসুন্ধরা শুভসংঘকে ধন্যবাদ।’ ঠাকুরগাঁও জেলা শাখা আয়োজিত বৃক্ষরোপণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে জেলা পুলিশ সুপার উত্তম প্রসাদ পাঠক বলেন, ‘সরকারের পাশাপাশি আমরা সবাই পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বেশি বেশি গাছ রোপণ করতে পারি।
সেই সঙ্গে পরিবারের সদস্য, বন্ধুবান্ধবসহ শুভাকাঙ্ক্ষীদের নিজ বাড়িতে বা পরিত্যক্ত স্থানে অন্তত দুটি করে গাছ রোপণের অনুরোধ করব। রোপণ করা গাছের যত্ন নেওয়া এবং সেই গাছ যেন কোনোভাবেই নষ্ট না হয়, তা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। বসুন্ধরা শুভসংঘ সৃজনশীল ও মানবিক কাজ করে যাচ্ছে। তাদের সঙ্গে ঠাকুরগাঁও জেলা পুলিশ একাত্মতা ঘোষণা করছে। বসুন্ধরা শুভসংঘের শুভ কাজে জেলা পুলিশের সহযোগিতা থাকবে।’ আইইউবিএটির সহযোগী অধ্যাপক ও বসুন্ধরা শুভসংঘ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাদেকুল ইসলাম বলেন, বৃক্ষ মানুষের পরম বন্ধু। প্রত্যেক ব্যক্তিকে হতে হবে বৃক্ষপ্রেমিক। বিশেষ দিনগুলোকে উপলক্ষ করে বৃক্ষ রোপণ করলে সেটা ভালো কাজে দেবে। দেশব্যাপী পর্যাপ্ত পরিমাণে বৃক্ষ রোপণ করতে পারলে গ্রীষ্মকালে অসহনীয় গরম কমে আসবে।
আয়োজকরা বলেন, নগরায়ণ, অপরিকল্পিত উন্নয়ন আর যন্ত্র-প্রযুক্তির মোহে অযাচিতভাবে বৃক্ষ নিধন করা হচ্ছে। উজাড় হচ্ছে বনভূমি। ফলে দেখা দিচ্ছে প্রাকৃতিক বিপর্যয়, বাড়ছে উষ্ণায়ন। মানবসভ্যতা হুমকির মুখে পড়ছে। দেশের পরিবেশ ও প্রকৃতি রক্ষায় বৃক্ষরোপণকে সামাজিক আন্দোলনে রূপ দিয়ে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে। নিজ নিজ উদ্যোগে প্রত্যেক সচেতন মানুষকে বৃক্ষরোপণে এগিয়ে আসতে হবে। পরিবেশের দূষণ, বিপর্যয়সহ জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতির দিক দিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বের প্রথম সারির দেশগুলোর একটি। উষ্ণায়ন বৃদ্ধির ফলে জলবায়ুর নেতিবাচক প্রভাবে ভুগছে দেশ। ফলে নানা ধরনের ক্ষতির সঙ্গে বাড়ছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ। বাংলাদেশকে ষড়ঋতুর দেশ বলা হলেও এখন তিনটি ঋতু ছাড়া অন্যগুলো দৃশ্যমান ও অনুভূত হয় না। জলবায়ুর নেতিবাচক প্রভাবে চিরচেনা গ্রীষ্ম, বর্ষা ও শীত ঋতুর বিশৃঙ্খল আচরণ প্রকৃতিকে এলোমেলো করে দিচ্ছে। এর থেকে পরিত্রাণ পেতে ভালো উপায় হচ্ছে বেশি বেশি করে গাছ লাগানো। তাই আমরা বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগে দেশব্যাপী বৃক্ষরোপণ ও চারা বিতরণ কর্মসূচি পালন করছি।
যেসব এলাকায় বৃক্ষ রোপণ করা হয়েছে
পটুয়াখালী, পটিয়া (চট্টগ্রাম), ফুলবাড়ী (দিনাজপুর), বোয়ালখালী (চট্টগ্রাম), দিনাজপুর, ঢাকা কলেজ (ঢাকা), জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাকা), ইডেন মহিলা কলেজ (ঢাকা), দিনাজপুর সরকারি কলেজ (দিনাজপুর), কালীগঞ্জ (গাজীপুর), কালাই (জয়পুরহাট), স্বরূপকাঠি (পিরোজপুর), কালিয়াকৈর (গাজীপুর), কাহারোল (দিনাজপুর), ধামরাই (ঢাকা), ঠাকুরগাঁও, বিরামপুর (দিনাজপুর), রাজিবপুর (কুড়িগ্রাম), পাবনা, ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ), নীলফামারী, কয়রা (খুলনা), গোদাগাড়ী (রাজশাহী), রৌমারী (কুড়িগ্রাম), কালকিনি (মাদারীপুর), ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম), ক্ষেতলাল (জয়পুরহাট), বোচাগঞ্জ (দিনাজপুর), ময়মনসিংহ, তারাকান্দা (ময়মনসিংহ), ফুলপুর (ময়মনসিংহ), নাটোর, নড়াইল, আইইউবিএটি (ঢাকা), পাইকগাছা (খুলনা), তালা (সাতক্ষীরা), চিলমারী (কুড়িগ্রাম), খুলনা, উলিপুর (কুড়িগ্রাম), রংপুর, জুড়ী (মৌলভীবাজার), গণ বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাকা), চুয়েট (চট্টগ্রাম), মুন্সীগঞ্জ এবং ঠাকুরগাঁও সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (ঠাকুরগাঁও)
SOURCE : কালের কণ্ঠশাজাহানপুরে বসুন্ধরা শুভসংঘের শীতবস্ত্র বিতরণ
Bashundhara Shuvosangho Distribute Blankets in Shajahanpur
ফেনীতে বসুন্ধরা শুভসংঘের শীতবস্ত্র বিতরণ
Bashundhara Shuvosangho Distribute Blankets in Feni
গাইবান্ধায় বৃদ্ধাশ্রমের অসহায়রা পেলেন বসুন্ধরা শুভসংঘের কম্বল
Helpless People of the Old Age in Gaibandha Receive Blankets from Bashundhara Shuvosangho
বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগে মেধাবী শিক্ষার্থীকে আর্থিক অনুদান
Financial Grants to Meritorious Students Under the Initiative of Bashundhara Shuvosangho
শহীদ ৫ সাংবাদিকের পরিবারকে কোটি টাকা সহায়তার ঘোষণা দিল বসুন্ধরা
Bashundhara Group Announces Tk 1cr Aid for Slain Journalists’ Families